হার্ট অফ ডার্কনেস উপন্যাসটি উপন্যাসিক জোসেফ কনরাড – Joseph Conrad কর্তৃক নেরেটিভ পদ্ধতিতে লেখা একটি ইংরেজি উপন্যাস। ন্যারেটিভ পদ্ধতিতে লেখা উপন্যাসটিতে চার্লস মার্লো নামের একজন চরিত্রকে দেখা যায়, যিনি সেন্ট্রাল আফ্রিকার কঙ্গো নদীর মধ্য দিয়ে হাতির দাঁত (ivory) পরিবহনের কাজ করেন। লেখক এই নদীটিকে আফ্রিকার শক্তিশালী নদী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মানচিত্রে নদীটিকে দেখলে মনে হয় একটা বিশাল সাপ, যেটির প্যাঁচ ছাড়িয়ে আছে সাগরের মাথা জুড়ে, দেহ এই বিশাল দেশে বক্রাকারে ছড়িয়ে আছে এবং যার লেজটি এই দেশের গভীরে হারিয়ে গেছে। সেন্ট্রাল আফ্রিকা ভ্রমণের পরিক্রমায় মার্লো কুর্টজ নামে একজন ইংরেজের প্রতি আবিষ্ট হয়ে পড়েন।
গল্পটি মানুষের মনোভাবের একটি জটিল অনুসন্ধান, যা মানুষ ধারণ করে অসভ্য বনাম সভ্য সমাজ গঠন করে। এই উপন্যাসের প্রধান তিনটি অংশ রয়েছে। যথাঃ primary station, central station এবং inner station. এই উপন্যাসে চার্লস মারলো নামের এক নাবিকের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায় স্থান পেয়েছে। এই উপন্যাসে চার্লস মারলো নামের মানুষটির আফ্রিকা (আফ্রিকার Congo নদী) ভ্রমণ এবং Colonization সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
Key Facts | Of the Novella |
---|---|
Full tile | Heart of Darkness |
Type | Novella, also auto-biographical |
Time setting | The exact time period is not mentioned in this novella but it seems to take place at the late 1890s. |
first publication | It first appeared serially in Blackwood’s magazine in 1899. |
second publication | In the conrad’s volume Youth as the third work in 1902. |
place setting | Opens on the Thames river but Events of the story take place in Brussels, Congo and then a Belgian territory. |
Heart of Darkness Summary in Bangla
ইংল্যান্ডের গ্রেভসেন্ড (gravesend) এর কাছে টেমস (Thames) নদীতে নেলী (nellie) নামক একটি জাহাজে বসে একদল পুরুষ বাতাসের জন্য অপেক্ষা করছে, যাতে তারা যাত্রা শুরু করতে পারে। এই দলে ছিল একজন আইনজীবী, একজন হিসাবরক্ষক, একটি কোম্পানির পরিচালক/ক্যাপ্টেন এবং নির্দিষ্ট কোনো পেশা ব্যতীত একজন ব্যক্তি, যার নাম হলো মার্লো এবং একজন Narrator যিনি জাহাজে নামহীন অতিথি হিসাবে প্রদর্শিত হন। সেই সময় মার্লো পৃথিবীর অন্ধকারতম জায়গা হিসাবে লন্ডন এবং ইউরোপ সম্পর্কে কথা বলতে শুরু করে অর্থাৎ ইংল্যান্ড এক সময় হার্ট অফ ডার্কনেস ছিল, যখন রোমানরা ইংল্যান্ডে এসেছিল শাসন করতে কিন্তু narrator এবং অন্যান্য অতিথিরা তার এসব কথায় বেশ মনযোগ দিতে পারছিল না। তারপর তিনি তার একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে শুরু করেছিলেন, যা শুনতে তারা আগ্রহী হয়।
মার্লো (Marlow) সব সময়ই নতুন নতুন জায়গায় ভ্রমন করার খুব আগ্রহী ছিল। ছোট বেলায় মার্লো মানচিত্র প্রচন্ড রকম ভালোবাসত এবং সে মানচিত্রের ফাকা জায়গা গুলোতে আঙ্গুল রেখে বলতো, বড় হয়ে সে ঐসব জায়গায় যাবে বা ভ্রমণ করবে এবং এটাও চাইতো যে সে একজন sea explorer হবে। মানচিত্রে আফ্রিকার কঙ্গো নামের একটা নদী মার্লোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং মার্লো সিদ্ধান্ত নেয়, সে নাবিক হবে এবং অবশ্যই ওই নদীটিতে ভ্রমণে যাবে। প্রাপ্ত বয়ষ্ক হয়ে সে প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ (orient) এবং ভারত উপমাহাদেশেও অনেকবার সামুদ্রিক ভ্রমণ করে। তারপর মার্লো সিদ্ধান্ত নেয় যে সে স্টিমশিপের অধিনায়ক হওয়া ছাড়া আর কিছু হতে চায় না, যেটি আফ্রিকার Congo নদীতে এদিক-ওদিকে (up and down) ভ্রমণ করে বেড়ায়।
যাইহোক তার চাচীর ইউরোপীয় এক আইভরি কোম্পানির সাথে সংযোগ ছিল, যা হাতির দাঁত (ivory) সংগ্রহ করে এবং মার্লোকে সেখানে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেন এবং সেখানে সে একজন অধিনায়কের স্থলাভিষিক্ত হয়, যে স্থানীয়দের সাথে দস্তাদস্তি (skirmish) তে নিহত হয়। মার্লো যখন কোম্পানির কার্যালয়ে পৌছায়, তখন পরিবেশটি অত্যন্ত ঘোলাটে এবং বিপদের লক্ষণ মনে হয়। তিনি অনুভব করেন যে প্রত্যেকে তার দিকে তাকিয়ে আছে। যে ডাক্তার তার শারীরিক পরীক্ষা করেন, তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করেন যে তার পরিবারে পাগলামি (insanity) আছে কি না। তিনি মার্লোকে আরও বলেছিলেন যে কোনোকিছু কি তাকে কঙ্গোর কোম্পানিতে যোগ দিতে প্ররোচিত করেছে। এটা মার্লোকে হতবুদ্ধি করে দেয়, কিন্তু এটা নিয়ে সে খুভ বেশি চিন্তা করে না।
পরের দিন চাকরিতে যোগদান করতে প্রথমে মার্লো কে প্রথমে যাত্রা শুরু করতে হয়েছিল কোম্পানির প্রাথমিক স্টেশন (primary company station) এর উদ্দেশ্যে, যা ছিল এক মাসের যাত্রা। কোম্পানি স্টেশনে জাহাযে করে যাওয়ার সময় কিছু বিধ্বস্ততার দৃশ্য মার্লকে আঘাত করে এবং সে যখন সেখানে পৌছায় তখন জানতে পারে যে সম্প্রতি এক কোম্পানি সদস্য আত্মহত্যা করেছে এবং শিকল দিয়ে বাধা বহুসংখ্যক কয়েদি দল [chain-gang] লোক রয়েছে, যারা সকলেই শূন্য অভিব্যক্তি দিয়ে তার দিকে তাকাচ্ছে। মার্লো আরও দেখে যে, কোম্পানি বৃদ্ধ এবং ছোট ছোট বাচ্চাদের দিয়ে ইট বহন করাচ্ছে এবং কঠোর অত্যাচার করছে। তখন একটি ছোট ছেলে মারলোর কাছে এলো, যাকে খুভ ক্ষুধার্থ দেখাচ্ছে, মার্লো তাকে কিছু শিপ-বিস্কুট দেওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারে না।
তারপর সে খুব সুসজ্জিত লোকের সাথে সাক্ষাৎ করে এবং তারা নিজেরা নিজেদের পরিচয় করিয়ে দেয়। ঐ লোকটি হলো কোম্পানির চিফ অ্যাকাউন্ট্যান্ট, যিনি মার্লোকে কুর্টজ নামে এক লোক সম্পর্কে বলেন এবং ব্যাখ্যা করে বলেন যে, কুর্টজ একজন প্রথম শ্রেণীর প্রতিনিধি এবং আইভরি কালেকশন এর জন্য সবাই তাকে কিং বলে অভিহিত করে।মার্লো এই ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব করে। প্রধান হিসাবরক্ষকের অসুস্থ মনোভাব পর্যবেক্ষণের দশ দিন পরে, মার্লো ১০ জন white companion নিয়ে কঙ্গো-Congo নদীর অভ্যন্তরে বন্য প্রান্তরের গভীরে 200 মাইল যাত্রা শুরু করে।
এই যাত্রা ছিল কষ্টকর। কারন মার্লো্কে অনেকগুলি পথ অতিক্রম করতে হয়েছিল। মার্লো অবশেষে সেন্ট্রাল স্টেশনে পৌঁছায়, যেখানে যে স্টিম বোটটি রাখা আছে তিনি সেই স্টিম বোটের ক্যাপ্টেন। এই সেন্ট্রাল স্টেশনের প্রধান ছিলেন General Manager. সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, মার্লোর স্টিম বোটটি ভেঙে গেছে যা মেরামত করতে সময় লাগবে। জাহাজটিকে ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় রিভেটগুলি (rivets) সরবরাহ করার অপেক্ষায় থাকাকালীন, মার্লো তার সময় জাগতিক কাজে ব্যয় করতে শুরু করে দেয়।
মার্লো তাদেরকে কখনই মানুষ হিসাবে বর্ণনা করে না। পুরো উপন্যাস জুড়ে, সাদা চরিত্রগুলো তাদের প্রাণীজগত হিসেবে বিবেচনা করে।এবং যেখানে সে এক ম্যানেজার এর সাথে দেখা করে, যিনি আপাতত তার কাজ তদারকি করবেন। কিন্তু এই সাক্ষাৎ তার জন্য মোটেই ভালো ছিল না বরং এক অদ্ভুত মিটিং ছিল। ম্যানেজারটি এমনভাবে হাসি দেয় যা খুব বিরক্তিকর কিন্তু মার্লোর উপরও ম্যানেজার ক্ষিপ্ত এই কারনে যে সে যথাসময়ে Central Station এ পৌছতে পারে নি। যাইহোক, এখানে আসার উদ্দেশ্য ছিল যাতে সে Inner Station পৌছাতে পারে। কিন্ত যে জাহাজে করে মার্লোকে যাত্রা করার কথা ছিল সেটা ভেঙে গেছে। জাহাজটিকে ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় রিভেটগুলিসরবরাহ করার অপেক্ষায় থাকাকালীন, মার্লো তার সময় জাগতিক কাজে ব্যয় করতে শুরু করে দেয়।
চাকরি ক্ষেত্রে ট্রেডিং পোস্ট এবং সেন্ট্রাল স্টেশনের পশ্চিমা প্রতিনিধিদের সান্নিধ্যে এসে তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করে মারলো। কোম্পানির কাজ ছিলো হাতির দাঁত সংগ্রহ করে ইউরোপে পাঠানো। কোম্পানির এজেন্টদের মধ্যে হাতির দাঁত সংগ্রহের প্রতিযোগিতা হতো। তারা ছিল পরশ্রীকাতরতায় পূর্ণ। কোম্পানির বড় পদ পাওয়ার জন্য লালায়িত সবাই। সেখানে থাকাকালীন এক কোম্পানির এক এজেন্ট তথা ব্রিকমেকার এর সাথে তার সাক্ষাৎ হয় এবং বন্ধুত্ব হয়। কিন্তু একসময় তারা একে অপরের প্রতি বিরক্ত হয় এবং চলে যাওয়ার সময় ব্রিকমেকার মার্লোকে বলল যে কুর্টজকে গিয়ে বল তার পূর্বের সুনাম এখন আর অক্ষত নেই এবং তা লঘু হতে শুরু করেছে।
এখানকার শ্রমিকদের উপর নির্যাতন প্রাথমিক স্টেশনের (Primary Station) থেকে আরও বেশি ছিল। কোম্পানির লোকেরা আফ্রিকার কালো বর্ণের মানুষদের দ্বারা অমানবিক পরিবেশে কঠিন ও কষ্টকর কাজ করাতো। কালো বর্ণের মানুষদের উপর সাদা বর্ণের মানুষদের অনিয়ম অত্যাচার ভিন্ন জগতের এক দ্বার উন্মোচন করে মার্লোর চোখের সামনে, যে জগৎটা অন্ধকারে পরিপূর্ণ।
মার্লো একদিন সন্ধ্যবেলায় তার স্টিমবোটে বসে এক মেকানিকের সাথে কথা বলছে, তখন তারা দেখল যে এক ব্যক্তি তার নিজের অভিযান নিয়ে আসেন, যিনি হচ্ছেন ম্যানেজারের চাচা। তো তাদের মধ্যকার কথা-বার্তা মার্লো ওতপেতে শুনেছিল [overhear] যে, ম্যানেজার বলছে যে কুর্টজ তার সংগ্রহিত সব আইভরি Central Station পাঠিয়ে দিয়েছে ঠিক কিন্তু তার আসা উচিত ছিল এবং কুর্টজ অসুস্থ হওয়ায় Inner Station ঝুকির মধ্যে পড়ে গিয়েছিল, যে স্টেশনটি ছিল আইভরি কালেকশনের স্টেশন। যাইহোক, মার্লো কথোপকথন দ্বারা বুঝেছিল ছিল তারা কুর্টজ এবং তার সহকারীদেরকে ফাঁসি দেওয়া দেখতে চায়, যাতে তারা তাদের স্টেশনটি দখল করতে পারে। তারপর মার্লো তার মেকানিকের সাথে কথা বলার মাঝে জানতে পারে যে আগামী ৩ সাপ্তাহের মধ্যে rivets চলে আসবে এবং খুভ দ্রুত তারা জাহাজটি ঠিক করে Inner Station এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে।
কয়েকদিনের মধ্যে জাহাজটি ঠিক হয়ে গেলে মার্লো ৬০ তীর্থযাত্রী (pilgrims), ২০ নরখাদক (cannibal crew) এবং ম্যানেজারকে নিয়ে ইনার স্টেশনের (inner station) দিকে যাত্রা শুরু করেছিল, যেখানে কুর্টজের অধীনে কাজ করবেন মার্লো। যাত্রার শুরুর দিন থেকে কুর্টজের স্টেশনে যেতে দুই মাস সময় লাগে। পথিমধ্যে রাত হওয়ার জন্য তাদের গন্তব্য থেকে আট মাইল দূরে তারা থামে। তো পরিবেশের মধ্যে একতা নিরবতা বা স্থবিরতা বিরাজ করছিল আর স্থবিরতা একটা খারাপ বা মারামারিরি ইঙ্গিত দিচ্ছিল। পরদিন সকালে সত্যিই আফ্রিকার Natives সাথে তাদের মারামারি লেগে গেল। এখানে একটা মজার কথা হলো যে, ক্যানিবালরা ম্যানেজারকে বলছে আমাদেরকে কাছে Natives দের ধরিয়ে দিন আমরা তাদেরকে কেটে কেটে খাব। কিন্তু মার্লো তাদের এই কথা শুনে ব্যাপকভাবে আশ্বর্য হলো যে এই ক্যানিবালরা নেটিভদের খাবে অথচ জাহাজের উপর হাতেগুনা কয়েকজন সাদা ব্যক্তি আছে যাদেরকে তারা অতি সহজে আক্রমণ করতে পারে বা খেতে পারে। কিন্তু তারা এটা না করে ভয়ে তাদের অধীনস্ত হয়ে আছে। কারন এই সাদা ব্যক্তিরা তাদেরকে যে কোনো মুহুর্তে গুলি করে মেরে ফেলতে পারে।
যাইহোক, পরিস্থিতি স্থির করতে পিলগ্রিমসরা ঝোপ-ঝাড় এর মাঝে গুলাগুলি করা শুরু করে দেয়। পরবর্তিতে পরিস্থিতি যখন শান্ত হলো, তখন গুজব রটানো হলো যে এই মারামারির সময় কুর্টজ মারা গেছে কিন্তু মার্লো সেটা বিশ্বাস করেনি। কারন সে মনে করে কুর্টজ হচ্ছে ফেসিন্যাটিং কারেকটার, তাই তার সাথে সাক্ষাৎ না হলে তার ভ্রমণ টাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
তারপর কিছু পিলগ্রিমস তদন্ত করতে তীরে চলে যায়। তদন্ত করার পর তারা পুণরায় যাত্রা শুরু করল এবং Inner Station এ গিয়ে পৌছালো। সেখানে পৌছেই মার্লো একজন রাশিয়ান এর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়, যে harlequin [joker, mocker] এর অনুরুপ। ঐ রাশিয়ান বলেছে যে কুর্তজ জীবিত তবে কিছুটা অসুস্থ। স্থানীয় লোকেরা কুর্তজকে ছেড়ে যেতে চায় না কারণ তিনি তাদের মন বাড়িয়েছেন। কুর্টজও চলে যেতে চায় না কারণ সে মূলত উপজাতির অংশ হয়ে গেছে। ঐ রাশিয়ান কুর্টজ সম্বন্ধ্যে বলে কুর্টজ বিভিন্ন গ্রাম আক্রমণ করে আইভরি সংগ্রহ করেছে তা উপজাতির সহযোগিতার মাধ্যমে করেছে। কিন্তু হঠাট একদিন সে একাই আইভরি সংগ্রহ করার জন্য বেরিয়ে পড়ে এবং ফিরে এসে সে অসুস্থ হয়ে যায়। আর সেই সময় থেকে সে (রাশিয়ান) এবং তার উপপত্নি তার সেবা করে আসছে।
আফ্রিকার দুর্গম বুনো প্রান্তরে কাজ করতে গিয়ে কুর্টজ নামের এজেন্টের ব্যাপারে কৌতূহলী হয়ে ওঠে মার্লো। এই কুর্টজ তার কর্মদক্ষতার গুনে অতুলনীয় এক ইমেজ গড়ে তুলেছেন কঙ্গো তে। সেখানকার স্টেশনগুলোর মূল কাজ হলো হাতির দাঁত সংগ্রহ করে ইউরোপে পাঠিয়ে দেয়া। এ কাজে সাফল্যের দিক দিয়ে অন্যসব এজেন্টেদেরকে ছাড়িয়ে যান কুর্টজ। তার এই বিশেষ গুন ক্যারিয়ারকে যেমন উজ্জ্বল করে, তেমনি তার কলিগদের মাঝে ছড়ায় ঈর্ষার আগুন। সেন্ট্রাল স্টেশনের ম্যানেজার স্বয়ং কুর্টজের ব্যাপারে ঈর্ষান্বিত। কুর্টজ তার আসনটিকে টলিয়ে দিতে পারে, এই ভয়ে কুর্টজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন ম্যানেজার। সবার মুখে কুর্টজের প্রশংসা শুনে কল্পনায় মার্লো তাকে অসাধারণ ব্যক্তি হিসেবে ভেবে নেয়। কুর্টজকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে মার্লো।
অবশেষে বহু আকাঙ্ক্ষিত কুর্টজের দেখা পায় মার্লো। সেখানে এই অসাধারণ ব্যক্তিটির মাঝে মার্লো আবিষ্কার করে অকল্পনীয় দ্বৈত সত্তা। যে কুর্টজ একদিকে পেশাগত কাজে সুদক্ষ, সাংগঠনিক কাজে বলিষ্ঠ, কবি এবং চিত্রকর, সেই কুর্টজ ই আবার শিরশ্ছেদের মত বর্বরোচিত কাজে লিপ্ত, বেশি বেশি হাতির দাঁত পাওয়ার জন্য লালায়িত। রাশিয়ান বলে যে, মার্লোদের শিপে যে নেটিভদের দ্বারা আক্রমণ হয়েছিল সেটা কুর্টজের নেতৃত্বই হয়েছে। মানুষের সুকুমার বৃত্তির অপরপিঠে যে অদৃশ্য অন্ধকার জগৎ, আফ্রিকার গহীন বুনো প্রান্তরে এসে মার্লো নিজ চোখে দেখতে পায় পাপের সেই ভয়াল জগৎ টাকে। এমনকি সে নিজের আত্মার প্রতিচ্ছবি দেখতে পায় পৃথিবীর আদিমতম পরিবেশে এসে।
রাশিয়ানদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পরে মার্লো তার খুব আবেগপ্রবণ মানুষটির খুব পরিষ্কার ছবি দেখতে পায়, যে এখন খুভ অসুস্থ এবং শোচনীয় অবস্থায় আছে। মার্লো তা দেখে খুভ বিস্মিত হয় নি। সে মনেকরে এটা তার প্রাপ্য। তারপর সে দেখল নেটিভরা তার কুঁড়েঘর ঘিরে রাখে।যখন পিলগ্রিমসরা কুর্টজকে স্টিমবোটের কেবিনে নিয়ে যাচ্ছিল, যাতে ম্যানেজার কুর্টজের সাথে কথা বলতে পারে, তখন কুর্টজ তাদেরকে বলে চলে যেতে। এমতাবস্থায় মার্লো একটি সুন্দরী নেটিভ মহিলাকে তীরে বরাবর পরিমিত পদক্ষেপে হাঁটা এবং স্টিমারের পাশে থামতে দেখেন; সাহিত্যিক ভাষ্যকাররা বলেছেন যে ঐ মহিলা কুর্তজের উপপত্নী। কিন্তু রাশিয়ান ঐ মহিলাকে দেখে ভয় পেয়েছিল। তারপর ম্যানেজার যখন কেবিন থেকে বেরিয়ে আসে তখন সে মার্লোকে একপাশে টেনে নিয়ে যায় এবং বলে যে কুর্তজ এই অঞ্চলে কোম্পানির ব্যবসায়কে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। পরে, রাশিয়ান প্রকাশ করেছেন যে কুর্তজ বিশ্বাস করেন যে কোম্পানি তাকে স্টেশন থেকে সরিয়ে হত্যা করতে চায় এবং মার্লো নিশ্চিত করে যে ফাঁসির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তখন মার্লো রাশিয়ানকে বলে তুমি যত শীঘ্র সম্ভব এখান থেকে পালিয়ে যাও নতুবা তুমাকে ফাসি দেওয়ার সম্ভাবনা আছে।
মধ্যরাতের পরে, মার্লো টের পায় যে কুর্তজ স্টিমারের কেবিনটি থেকে বেরিয়ে তীরে ফিরে গেছে। তখন মার্লো উপকূলে গিয়ে দেখেন যে খুব দুর্বল কুর্তজ স্টেশন বাড়িতে যাওয়ার পথে হামাগুড়ি দিচ্ছেন, যদিও সাহায্যের জন্য স্থানীয়দের ডাকতে খুব দুর্বল নয়। মার্লো কুর্তজকে বিপদাশঙ্কা জানালে ক্ষতি করার হুমকি দেয় তবে কুর্তজ কেবল শোক করে বলেছিল যে সে এই অঞ্চলে বেশি কিছু করতে পারেননি। পরেরদিন স্টিমবোটটি প্রস্থান করে।কিন্তু ফিরতি যাত্রায় কুর্তজের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায় এবং মার্লোও ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্টিমবোটটি ভেঙে যায় কিছুদিন পর কার্টজ মার্লো এর মাঝে বন্ধুত্ব হয় এবং কুর্টজ মার্লোকে তার সমস্ত পুরানো ফাইল এবং কাগজপত্র দিয়েছিলেন।এর মধ্যে তাঁর প্রিয়তমার একটি ছবি রয়েছে। এবং বলে যে এগুলো ম্যানেজার এর কাছ থেকে গোপন রাখতে। তারপর কুর্টজ জাহাজে মারা যান এবং মারা যাবার সময় কুর্টজ The horror শদটি দুইবার উচ্চারণ করে।
(এখানে The horror শব্দটি দুইবার উচ্চারনের দ্বারা জোসেফ কনরাড বুঝিয়েছেন যে, এক horror দ্বারা Imperialism বা জঘণ্য কাজ বুঝানো হয়েছে এবং অন্যটি দ্বারা মৃত্যুর পর যে জাহান্নাম চিরস্থায়ী এটা বুঝানো হয়েছে)
এরপর মার্লো ইংল্যান্ডে ফিরে আসে এবং তারপর এক বছর পাড় হয়ে যায়। কিন্তু তাঁর বন্ধুর স্মৃতি তাকে হতাশ করে। ম্যানেজার তখন মার্লোকে বারবার বলে কুর্টজ তাকে যে ডকুমেন্টগুলো দিয়েছিল সেগুলো দেওয়ার জন্য। তখন মার্লো পার্সোনাল চিঠি আর একটি ফটোগ্রাফ ব্যতীত বাকি সব ডকুমেন্ট দিয়ে দেয়। যাইহোক, পরে সে ফটোগ্রাফ বা ছবিটির মহিলাটি সন্ধান করে। মার্লো যখন তার সাথে দেখা করে, তখন দেখে তিনি কালো পোশাক পরেছিলেন এবং এখনও শোকের গভীরে রয়েছেন, যদিও কার্টজের মৃত্যুর পরে এক বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেছে। তখন সে fiancee বলে যে, আমি কুর্টজকে কতটা ভালোবাসি সেটা তাকে বলতে পারিনি। তিনি মার্লোর কাছে কুর্তজের মৃত্যুর সময় তার শেষ শব্দগুলি পুনরাবৃত্তি করতে বলেছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মার্লো মিথ্যা বলে এবং তাকে বলে যে কুর্তজের চূড়ান্ত শব্দটি ছিল তার (মহিলা) নাম। তখন fiancee খুশে আত্মহারা হয়ে বলে সে তাকে এতো এতো ভালোবাসত।
তারপর, উপন্যাসের শেষ দিকে টেমস নদীর দিকে তাকিয়ে মার্লো এই কথা বলে যে টেমস নদীর পানি ‘হার্ট অব ডার্কনেস’ এর দিকে প্রসারিত। মূলত ‘হার্ট অব ডার্কনেস’ উপন্যাসে, আফ্রিকার স্থানীয় কালোদের উপর পশ্চিমা ঔপনিবেশিকদের শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব, নির্মমতা আর অমানবিক আচরন ফুটে উঠেছে নিখুঁতভাবে।
আরও দেখুন : Twentieth Century Novel Brief Solution
Heart of Darkness major Characters in bangla
পুরো উপন্যাস জুড়ে দুইটি চরিত্রের নাম উল্লেখ আছে। একটি হলো চার্লস মারলো, অন্যটি হলো কুর্টজ। বাকি চরিত্র গুলোর মধ্যে white দেরকে তাদের পেশা অনুযায়ী নামকরণ করা হয়েছে। যেমন Accountant, Manager etc. আর আফ্রিকার Black native দের বিভিন্ন পশুর নামে উল্লেখ করা হয়েছে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-
Marlow : মার্লো উপন্যাসের নায়ক। মার্লো দার্শনিক, স্বতন্ত্র-চিন্তাশীল এবং সাধারণত তার চারপাশের লোকদের সম্পর্কে সন্দেহবাদী। তিনি একজন মাস্টার গল্পকার, বাক্যবাগীশ এবং শ্রোতাদের তাঁর গল্পের প্রতি আকৃষ্ট করতে সক্ষম। মার্লো তার সহকর্মী ইউরোপীয়দের অনেক কুসংস্কারকে ভাগ করে নিলেও তিনি বিশ্বজুড়ে যথেষ্ট দেখেছেন এবং সাম্রাজ্যবাদকে সন্দেহজনক করে তোলার জন্য পর্যাপ্ত অবজ্ঞাপূর্ণ সাদা পুরুষদের মুখোমুখি হয়েছেন।
Kurtz : কুর্টজ ইনার স্টেশনটির প্রধান এবং মার্লোর অনুসন্ধানের বিষয়। কুর্টজ হলো অনেক প্রতিভাধর মানুষ। যেমন সে একজন প্রতিভাশালী সংগীতশিল্পী এবং দুর্দান্ত চিত্রশিল্পী। সেগুলোর মধ্যে প্রধান প্রতিভা হচ্ছে charisma এবং পুরুষদের নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা। তার পতন ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক আচরণ পরিচালনা করে এমন কপট নিয়মাবলী উপেক্ষা করার ব্যাপারে তার ইচ্ছার ফলস্বরূপ বলে মনে হয়। কুর্টজ নেটিভদের সাথে অতিরিক্তভাবে ত্রাতৃত্বরুপে মিশে এবং উপস্থিতি অবলম্বন না করে “নিজেকে পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন”, এতে করে তিনি পরিণত হয়েছেন বন্যভাবে সফল কিন্তু তার সহকর্মী সাদা পুরুষদের ক্রোধের দায়িও হন।
General manager : জেনারেল ম্যানেজার হচ্ছে আফ্রিকা অঞ্চলের এজেন্ট, যিনি কেন্দ্রীয় স্টেশন পরিচালনা করেন। সে গড়পড়তা এবং দক্ষতায় অবিস্মরণীয়, তবে তিনি তার চারপাশের লোকদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করার এক অদ্ভুত ক্ষমতা অর্জন করেছেন, যার ফলে প্রত্যেককে তার উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিচলিত রেখেছেন।
Brickmaker : ব্রিকমেকার ব্রিক মেকার, যাকে মার্লো সেন্ট্রাল স্টেশনে দেখা করে। সে ম্যানেজারের খুব পছন্দের এবং তাকে এক ধরণের কর্পোরেট গুপ্তচর বলে মনে হয়। তিনি কখনই কোনও ইট তৈরি করেন না, কারণ তিনি এমন কিছু প্রয়োজনীয় উপাদানটির জন্য অপেক্ষা করছেন যা কখনও সরবরাহ করা হয় না। তিনি ক্ষুদ্র এবং সংযোগকারী এবং ধরে নেন যে অন্য লোকেরাও খুব বেশি।
Chief accountant : চিফ আকাউনট্যান্ট একজন দক্ষ কর্মী কিন্তু আউটার স্টেশন তথা যেখানে সে থাকে এবং কাজ করে সেখানে কোন্দল এবং উত্তাপ সত্ত্বেও নির্লজ্জ সাদা অংশে পোশাক পরার এবং নিজেকে একেবারে পরিপাটি করে রাখার এক অবিশ্বাস্য অভ্যাস রয়েছে। সে এমন কতিপয় উপনিবেশের একজন, যে মনে করে যে কোন কিছু অর্জন করেছে: সে নিজের পোশাকের যত্ন নেওয়ার জন্য একজন স্থানীয় মহিলাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
Thanks
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
আপনাকেও ধন্যবাদ!
Lot of thanks
আপনার লেখাগুলো অনেক অনেক ভালো, পড়ে খুব খুব উপকৃত হোই। কিছু দিন আগে আপনার ওয়েবসাইটটি না পেয়ে খুব মনখারাপ হয়েছিলো। কারণ এখানকার মতো গুছানো সামারি আর কোথাও নেই। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার লেখাগুলো অসাধারন, গুছানো আর ক্লিয়ার করে লেখা। এই লেখাটা পড়ে এই নভেলটা সম্পর্কে আমার ধারনা ক্লিয়ার হল। অসংখ্য ধন্যবাদ।